• ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালের ভাইজানখ্যাত কুখ্যাত ইকবাল সীমান্তে গ্রেপ্তার

দখিনের বার্তা
প্রকাশিত অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১৩:৩৭ অপরাহ্ণ
বরিশালের ভাইজানখ্যাত কুখ্যাত ইকবাল সীমান্তে গ্রেপ্তার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ভারতে পালিয়ে যাবার সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার হয়েছেন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ভাইজানখ্যাত হাফিজুর রহমান ইকবাল (৫৭)।

দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তারকৃত ইকবাল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বরিশালের উজিরপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

তিনি (ইকবাল) উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের কেশবকাঠি গ্রামের বাসিন্দা রফিজ উদ্দিন মৃধার ছেলে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উজিরপুর মডেল থানার ওসি মো. আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও উজিরপুর মডেল থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি (ইকবাল) পলাতক আসামি।

দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ওসি মো. মমতাজুল হক মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন-বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় হাফিজুর রহমান ও মাহমুদুল আজাদ নামের দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও নিজ থানায় দুটি করে পৃথক মামলা রয়েছে।

ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে তারা দুইজনই গ্রেপ্তার এড়াতে নিরাপদ রুট মনে করে বিরামপুরের কাটলা সীমান্তপথে চোরাকারবারিদের সহযোগিতায় ভারতে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

ওসি বলেন-পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে গ্রেপ্তারকৃতদের দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হবে।

অপর গ্রেপ্তারকৃত মাহমুদুল আজাদ ওরফে রিপন (৪৮) বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর কলোনি মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ভেলারপাড়া গ্রামে পাকা সড়কের একটি কালভার্টের কাছে দুজন ব্যক্তিকে ইজিবাইকে যেতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক।

তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে যুবকেরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ব্যক্তি কখনো বলেন, তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন, আবার কখনো জানান, জরুরি কাজে এলাকায় এসেছেন।

তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয় যুবকরা বিরামপুর থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে।

উল্লেখ্য, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে বরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খানকে অপহরন করে গুমের অভিযোগ রয়েছে।

হুমায়ুন কবির খানের ভাই মঞ্জু খান অভিযোগ করে বলেন-২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে হাফিজুর রহমান ইকবালের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হুমায়ুন কবিরকে অপহরন করে। সেই থেকে অদ্যবধি তার (হুমায়ুন কবির) কোন খোঁজ মেলেনি।

এ ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগসহ মামলা দায়ের করায় প্রকাশ্যে একাধিকবার মামলার বাদি মঞ্জু খানের ওপর হামলা চালিয়েছে হাফিজুর রহমান ইকবাল ও তার ক্যাডার বাহিনী।

মঞ্জু খান আরও জানিয়েছেন-হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে হারতা এলাকায় গনডাকাতিসহ পতিত সরকারের সময় উজিরপুরে সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বিস্তার অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগীরা প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান ইকবালের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেছেন