• ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরগুনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ-অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, অব্যাহতির দাবি

দখিনের বার্তা
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২৫, ২০:১৫ অপরাহ্ণ
বরগুনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঘুষ-অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, অব্যাহতির দাবি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

বরগুনার আমতলী উপজেলার ৭নং আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতিসহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে অনাস্থা চেয়ে ইউনিয়নের ১০ জন সদস্য বরগুনা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যান মালার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। সোমবার (৬ অক্টোবর) নির্ধারিত শুনানিতে চেয়ারম্যান মালা উপস্থিত হননি।

২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সোহেলী পারভীন মালা। অভিযোগকারীরা জানান, গত চার বছরে তিনি ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করেছেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে বিএনপি অফিস ভাঙচুরসহ সরকারপন্থী সভা-সমাবেশে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো স্বপদে বহাল আছেন।

ইউপি সদস্যরা অভিযোগ- চেয়ারম্যান মালা সরকারি প্রকল্প ও সহায়তার নামে লোকের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। প্রতিটি সরকারি টিওবয়েল বাবদ ২০-৩০ হাজার টাকা, জন্ম, মৃত্যু ও ওয়ারিশ সনদে ৬০০ থেকে ১,০০০ টাকা, জেলেদের ট্রেড লাইসেন্সে প্রায় ৫ লাখ টাকা, ভিজিএফ, ভিজিডি ও অন্যান্য সহায়তায় ২ থেকে ৬ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠে।

উল্লেখ্য, তিনি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক প্রভাব প্রয়োগ করে ইউপি সদস্যদের হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে।

বর্তমানে চেয়ারম্যান মালা আত্মগোপনে রয়েছেন এবং ইউনিয়নের নাগরিক সেবা প্রদানে কোনো কার্যকর দায়িত্ব পালন করছেন না। ফলে জন্ম, মৃত্যু, ওয়ারিশ সনদসহ নাগরিক সেবায় ভোগান্তি দেখা দিচ্ছে। ইউনিয়নবাসী দ্রুত সময়ের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, তারা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টাকা দিয়েছেন কিন্তু ঘর বা অন্যান্য সহায়তা পাননি। ইউপি সদস্যরা বলেন, চেয়ারম্যান প্রকল্পের নামে টাকা আদায় করে কোনো কাজ করাননি।

ইউনিয়ন সচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির কারণে গত তিন মাস ধরে পরিষদে কোনো সভা হয়নি, ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম এবং নাগরিক সুবিধা প্রদানে সমস্যা তৈরি হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগনামা পেয়েছেন এবং তদন্ত চলমান রয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে।