• ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশাল নগরীতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ১০ তলা ভবন ভাড়ার নোটিশ দিলো ডেভলপার

দখিনের বার্তা
প্রকাশিত জুন ৩০, ২০২৫, ২২:১১ অপরাহ্ণ
বরিশাল নগরীতে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ১০ তলা ভবন ভাড়ার নোটিশ দিলো ডেভলপার
সংবাদটি শেয়ার করুন....

নিজস্ব প্রতিবেদকঃআদালতের নির্দেশ অমান্য করে বরিশাল নগরের ১৬ নং ওয়ার্ডের গোড়াচাঁদ দাস রোডস্থ হালিমা খাতুন স্কুলের সাথে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ মোশারেফ আলী খান বাদশা’র ১০ তলা ভবনের ভাড়ার নোটিশ লাগানোর অভিযোগ উঠেছে ডেভলপারের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য গত বছরে ২৮ শে নভেম্বর “বন্টন” নিয়ে বিরোধের জেরে প্রথম স্ত্রী,৪ সন্তান ও ডেভলপার কোম্পানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় স্ত্রী আদালতে মামলা দায়ের করেছে।মৃত.মোঃ মোশারেফ আলী খান বাদশার রেখে যাওয়া নির্মানাধীন ১০ তলা বহুতল ভবনের বন্টন নিয়ে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে বিরোধ চলছিল বছর কয়েক ধরে।বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়িয়েছে ।স্বামীর সম্পত্তি থেকে জোরপূর্বক বেদখলের চেষ্টা ও খুন যখমের হুমকির অভিযোগ এনে দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগম বাদী হয়ে গত ২৮ নভেম্বর বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁর স্মামীর প্রথম স্ত্রী রুবিনা আক্তার, ছেলে মোঃআল জায়েদ খান রছি,জুবায়ের খান রনি,আফসানা ইয়াসমিন রেখা ও এম,আর,ডেভলপার লিঃ এর স্বত্বাধিকারী কাজী মাহফুজুর রহমান সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ১৪৫/১৪৫ ধারায় স্থিতি আদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করেন।এম,পি মামলা নং- ১৭২৯/২০২৪(কোতয়ালী)।
মামলার বাদী মৃত মোঃ মোশারেফ আলী খান বাদশার দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগম বলেন,আমার ২ ছেলে ও ১ মেয়ে আছে। আমার স্বামী মৃত্যুর পূর্বে বরিশাল নগরের ১৬ নং ওয়ার্ডের গোড়াচাঁদ দাস রোডস্থ হালিমা খাতুন স্কুলের পাশে বরিশাল জেলার কোতয়ালী থানার, জে.এল নম্বর ৫০, বগুড়া আলেকান্দা মৌজায় তাঁর নিজের নামে ৬ শতাংশ ও প্রথম স্ত্রী রুবিনা আক্তারের নামে রাখা ৬ শতাংশ সহ মোট ১২ শতাংশ জমি আছে। আমার স্বামী মোঃ মোশারেফ আলী খান বাদশা মৃত্যুর আগে ঐ জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণের জন্য এম,আর,ডেভলপার লিঃ এর স্বত্বাধিকারী কাজী মাহফুজুর রহমানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর কয়েক মাস পরে আমার স্বামীর মারা যায়।
ভবনের নির্মান কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। ভবনে মোশরেফ আলী খান বাদশার নামের ৬ শতাংশ জমির মধ্যে ২.৭৫ শতাংশ জমির আমি ও আমার ৩ সন্তানরা বৈধ ওয়ারিশ।দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগম অভিযোগ করেন প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানরা উগ্র ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। আমাদের প্রাপ্য জমি থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে চায়। গত ২ নভেম্বর শনিবার সকালে বহিরাগত ৫/৭ জন লোক দিয়ে এসে বিরোধপূর্ন সম্পতি বিক্রির পায়তারা চালায়।আমাদের জমি দিবেনা বলে জানায়। আর জমিতে নির্মিত ফ্লাট তারা বিক্রি করে দিবে। তাদের কাজে বাঁধা দিলে আমাকে ও খুন করারও হুমকি দেয়।তাই স্বামীর সম্পত্তির সমান অধিকার ও সন্তানদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।মামলা ও অভিযোগের বিষয়ে বিষয়ে মোশরেফ আলী খান বাদশার প্রথম স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন,আমার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী জমির অংশিদার দাবি করে আদালতে মামলা করেছে। আদালতের পাঠানো নোটিশ পুলিশের কাছ থেকে রিসিভ করে রেখেছি। আমরা আইনি ভাবে মোকাবেলা করবো। আর আমাদের বিরুদ্ধে খুন জখমের যে অভিযোগ দায়ের করেছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।মামলার অপর আসামী এম,আর,ডেভলপার লিঃ এর স্বত্বাধিকারী কাজী মাহফুজুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালের দিকে বগুড়া আলেকান্দা মৌজায় সাবেক প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর মোশারেফ আলী খান বাদশা ও তার প্রথম স্ত্রীর নামের ১২ শতাংশ জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণে চুক্তিবদ্ধ হই।
আমার অর্থায়নে নির্মান কাজ এখনও চলছে।কাজ শেষ হলে আমি ভবনের ৫২ % অংশ পাব। আর ভবনের বাকি ৪৮% অংশ পাবে মোশারেফ আলী খান বাদশা ও তার স্ত্রী সন্তানেরা। তবে মোশারেফ আলী খান বাদশার মৃত্যুর পরে দুই স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে জমি বন্টন নিয়ে বিরোধে এখন আমাকেও মামলার আসামী করা হয়েছে। এই মুহুর্তে ভবনের নির্মান কাজ বন্ধ থাকলে আমার অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে। তাদের নিজেদের মধ্যকার ঝামেলা নিজেরা মীমাংসা করলেই ভালো হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী মডেল থানার এস আই পার্থ সারথী বলেন, মামলার বিবাদীদের কাছে আমি আদালতের নির্দেশনা পৌছে দিয়েছি। আগামী ১৬ জানুয়ারী মামলার ধার্য তারিখে তাদের আদালতে হাজির হতে বলেছি। আর যেহেতু ভবনের ফ্লাট বন্টন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিবেশ বিরাজ করছে। তাই উভয়পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি। তাঁরা যদি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় না রাখে তাহলে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ডেভলাপর কাজী মাহফুজুর রহমানকে বাদী ভবন থেকে ভাড়ার নোটিশ নামাতে বললেও তিনি নামাননি বলে অভিযোগ করেন। সংবাদকর্মীরা ডেভলপার মাহফুজকে জানার জন্য ফোন দিলে তিনি বলেন আমার ভাগে যা আছে আমি বিক্রির জন্য সাইনবোর্ড দিয়েছি তাতে আদালতের কি।