• ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশাল প্রজনন মৌসুমেও থামছে না মা ইলিশ শিকার ও বিক্রি

দখিনের বার্তা
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২৫, ১৭:৩৩ অপরাহ্ণ
বরিশাল প্রজনন মৌসুমেও থামছে না মা ইলিশ শিকার ও বিক্রি
সংবাদটি শেয়ার করুন....

 

​আসাদুজ্জামান শেখ ::

 

​বরিশাল নদীগুলো এখন মা ইলিশ সংরক্ষণের সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসাধু ইলিশ শিকারীরা স্বীকার করছেন ইলিশ। প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ,পরিবহন, মজুত ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও এই নদ-নদীগুলোতে চলছে অবাধে ইলিশ শিকারের প্রতিযোগিতা। মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান, অন্যদিকে জেলেদের লুকোচুরি—দু’পক্ষের এই ‘চোর-পুলিশের খেলা’ কোনোভাবেই থামছে না।
​লাগাতার অভিযান, তবুও শিকার বন্ধ হচ্ছে না।

​নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে উল্লিখিত নদ-নদীগুলোতে অন্তত ১৫টি অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে শতাধিক অবৈধ কারেন্ট জাল এবং মাছ ধরার ৭টি নৌকা জব্দ করে জাল আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়। একইসঙ্গে, আইন ভাঙার অপরাধে একাদিক জেলেকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।​

প্রশাসনের এই কঠোর তৎপরতা সত্ত্বেও নদীতে মা ইলিশ শিকারের প্রবণতা কমছে না। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দিন-রাত সমান তালে চলছে এই ডিম ওয়ালা মা ইলিশ মাছ ধরার কাজ ও বেচা বিক্রি। অভিযানের ট্রলার দেখলেই জেলেরা নৌকা-জাল নদীর তীরে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে। আবার ট্রলার চলে গেলেই মুহূর্তের মধ্যে তারা ফিরে এসে পুনরায় জাল ফেলছে। আর এদেরকে সহযোগিতা করছে দাদনে টাকা দেওয়া অসাধু আরতদারগণ।

স্থানীয়রা বলছেন, বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে ও ভোররাতে জেলেরা দল বেঁধে ছোট নৌকায় ইলিশ শিকার করছে। মৎস্য কর্মকর্তারা যখন নদীর এক প্রান্তে অভিযান চালান, ঠিক তখনই অন্য প্রান্তে শত শত নৌকা-জালে মাছ ধরা চলে।​নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেছেন, নদীই তাদের একমাত্র জীবিকা।সুশীল সমাজের একাধিক ব্যক্তি বলেছেন নদীর পাশাপাশি স্থলে একাধিক স্থানে যেমন কেডিসি ৫নং পলাশপুর,তালতলী ভাঙার পর, শায়েস্তাবাদ,হটস্পট গুলোতে অভিযান পরিচালনা খুবই জরুরী।

সরকার যদি তাদের জন্য বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা না করে, তবে না খেয়ে মরতে হবে।​অন্যদিকে দায়িত্বরত মৎস্য কর্মকর্তা ডিএফও রিপন কান্তি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, ইলিশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে আইন ভাঙলে কোনো ছাড় নেই। তিনি বলেন, ইলিশ সংরক্ষণে প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এবং মা-ইলিশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে।

​সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ। কিন্তু বরিশাল কীর্তনখোলা নদীর দপদপিয়া,কেডিসি,রসুলপুর,৫ নং পলাশপুর(হট স্পট) বেলতলা খেয়াঘাট, চর আফদানী,মহাবাজ, তালতলী ভাঙার পর, ভাঙার পাড়ের মাথা, শায়েস্তাবাদ,চলছে অবাধে রাত দিন শিকার ও বিক্রি ।৫ নং পলাশপুর এবং বেলতলা কিছু অসাধু ইলিশ বিক্রেতা দাদন দিয়ে টাকা দাদন দিয়ে ধরাচ্ছেন ইলিশ মাছ এবং তাদের রয়েছে এক ঝাঁক উদীয়মান ইয়ং স্টার, যাদের পিছনে রয়েছে লাল কালির দাগ। গেছে বছর এই একই ব্যক্তিরা একই অবৈধ ব্যবসা করেছিলেন।

এমন চলতে থাকলে প্রজনন প্রক্রিয়া মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে ধারণা সুশীল সমাজের। প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকলেও এই ‘চোর-পুলিশের খেলা’ রয়েছে অব্যাহত।